এই ব্লগে আপনি জানতে পারবেন বাংলাদেশের সকল অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিমান ও রুট সম্পর্কে।
বাংলাদেশের আকাশপথে যোগাযোগ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, আর এর সাথে বাড়ছে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিমান রুটের পরিসর। দ্রুতগতি ও সুবিধার কারণে দেশের ভেতরে ও বাইরের বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রীরা বিমানে ভ্রমণকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন। এই ব্লগে আমরা তুলে ধরব বাংলাদেশের সকল গুরুত্বপূর্ণ বিমান রুট এবং এসব রুটে পরিচালিত এয়ারলাইন্সগুলোর বিস্তারিত তথ্য, যা আপনাকে ভ্রমণ পরিকল্পনায় সহায়তা করবে।
টিকিটের দাম জানুন
🔽
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিমান রুটসমূহ
বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ রুটগুলো মূলত দেশের প্রধান শহরগুলোকে সংযুক্ত করে। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, রাজশাহী, যশোর, সৈয়দপুর ও বরিশালে বিমানবন্দর রয়েছে। এই রুটগুলোতে প্রতিদিন নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালিত হয়, যা ব্যবসায়িক ভ্রমণ, পর্যটন বা পারিবারিক যাত্রা সব ক্ষেত্রেই যাত্রীদের জন্য উপযোগী।
প্রধান অভ্যন্তরীণ বিমান রুটগুলো হলো:
- চট্টগ্রাম (CGP): প্রতিদিন ১৩-১৭টি ফ্লাইট, সময়: ৫৫ মিনিট।
- সিলেট (ZYL): প্রতিদিন ১৪-১৬টি ফ্লাইট, সময়: ৪৫ মিনিট।
- কক্সবাজার (CXB): প্রতিদিন ১৩-১৪টি ফ্লাইট, সময়: ১ ঘন্টা ৫ মিনিট।
- সৈয়দপুর (SPD): প্রতিদিন ১০টি ফ্লাইট, সময়: ১ ঘন্টা।
- রাজশাহী (RJH): প্রতিদিন ৪-৫টি ফ্লাইট, সময়: ৫০ মিনিট।
- যশোর (JSR): প্রতিদিন ৩-৪টি ফ্লাইট, সময়: ৪৫ মিনিট।
- বরিশাল (BZL): প্রতিদিন ০-১টি ফ্লাইট, সময়: ৫০ মিনিট।
বাংলাদেশের প্রধান অভ্যন্তরীণ এয়ারলাইন্সগুলো হলো:
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স: বাংলাদেশের জাতীয় এয়ারলাইন্স হিসেবে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রুটে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করে।
ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স: এটি দেশের অন্যতম বেসরকারি এয়ারলাইন্স, যা অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক রুটেও ফ্লাইট পরিচালনা করে।
নভোএয়ার: অভ্যন্তরীণ রুটে বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য সেবা দেওয়ার জন্য এই এয়ারলাইন্স বেশ জনপ্রিয়।
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বিমান রুটসমূহ
বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরাসরি বা সংযোগসহ বিমানে যাতায়াত করা যায়। আন্তর্জাতিক রুটগুলোতে বাংলাদেশ বিমান ছাড়াও বিভিন্ন বিদেশি এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করে।
প্রধান আন্তর্জাতিক বিমান রুটগুলো হলো:
- দুবাই (DXB): প্রতিদিন ৬-৭টি ফ্লাইট, সময়: ৫ ঘন্টা ২৫ মিনিট।
- শারজাহ (SHJ): প্রতিদিন ৫-৭টি ফ্লাইট, সময়: ৫ ঘন্টা।
- কুয়ালালামপুর (KUL): প্রতিদিন ৫-৭টি ফ্লাইট, সময়: ৩ ঘন্টা ৫৫ মিনিট।
- কোলকাতা (CCU): প্রতিদিন ৫-৬টি ফ্লাইট, সময়: ১ ঘন্টা।
- ব্যাংকক (BKK): প্রতিদিন ৪টি ফ্লাইট, সময়: ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট।
- দিল্লি (DEL): প্রতিদিন ৪টি ফ্লাইট, সময়: ২ ঘন্টা ৪০ মিনিট।
- জেদ্দা (JED): প্রতিদিন ৩-৫টি ফ্লাইট, সময়: ৭ ঘন্টা ৪০ মিনিট।
- দোহা (DOH): প্রতিদিন ২-৫টি ফ্লাইট, সময়: ৬ ঘন্টা ১৫ মিনিট।
- চেন্নাই (MAA): প্রতিদিন ২-৪টি ফ্লাইট, সময়: ২ ঘন্টা ৪০ মিনিট।
- সিঙ্গাপুর (SIN): প্রতিদিন ৩টি ফ্লাইট, সময়: ৪ ঘন্টা ১০ মিনিট।
- মদিনা (MED): ০-২টি ফ্লাইট, সময়: ৭ ঘন্টা ৩৫ মিনিট।
- ইস্তানবুল (IST): প্রতিদিন ১-২টি ফ্লাইট, সময়: ৮ ঘন্টা ৫৫ মিনিট।
- কুনমিং (KMG): প্রতিদিন ১টি ফ্লাইট, সময়: ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট।
- কায়রো (CAI): ০-১টি ফ্লাইট, সময়: ৭ ঘন্টা ৩৫ মিনিট।
- রোম (FCO): ০-১টি ফ্লাইট, সময়: ১০ ঘন্টা ১০ মিনিট।
- টোকিও (NRT): ০-১টি ফ্লাইট, সময়: ৬ ঘন্টা ৩০ মিনিট।
- মালে (MLE): ০-২টি ফ্লাইট, সময়: ৪ ঘন্টা ২০ মিনিট।
- হংকং (HKG): ০-১টি ফ্লাইট, সময়: ৩ ঘন্টা ৩৫ মিনিট।
- বাহরাইন (BAH): প্রতিদিন ১-২টি ফ্লাইট, সময়: ৫ ঘন্টা ৩৫ মিনিট।
- কুয়েত (KWI): প্রতিদিন ১-৩টি ফ্লাইট, সময়: ৬ ঘন্টা।
- রিয়াদ (RUH): প্রতিদিন ২-৩টি ফ্লাইট, সময়: ৬ ঘন্টা ৪৫ মিনিট।
- বেইজিং (PKX, PEK): ০-১টি ফ্লাইট, সময়: ৫ ঘন্টা ৫-১৫ মিনিট।
- আবুধাবি (AUH): প্রতিদিন ১-৩টি ফ্লাইট, সময়: ৫ ঘন্টা ২০ মিনিট।
- গুয়াংজু (CAN): প্রতিদিন ২-৩টি ফ্লাইট, সময়: ৩ ঘন্টা ৪৫ মিনিট।
- মুম্বাই (BOM): ২টি ফ্লাইট প্রতিদিন, সময়: ৩ ঘন্টা ২০ মিনিট (নতুন ফ্লাইট ১২ নভেম্বর, ২০২৪)।
- কাঠমান্ডু (KTM): প্রতিদিন ২টি ফ্লাইট, সময়: ১ ঘন্টা ৩০ মিনিট।
- আদ্দিস আবাবা (ADD): ৩ নভেম্বর, ২০২৪ থেকে নতুন এয়ারলাইন।
জনপ্রিয় এয়ারলাইন্সসমূহ
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স: বাংলাদেশ বিমান দেশের অভ্যন্তরে এবং বাইরের বেশ কয়েকটি শহরে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করে।
এয়ারএশিয়া, এমিরেটস, মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স, থাই এয়ারওয়েজ, এবং কাতার এয়ারওয়েজ: এসব আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স ঢাকার সাথে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গন্তব্যকে সংযুক্ত করেছে, যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সহজে পৌঁছানোর সুযোগ তৈরি করেছে।
উপসংহার
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিমান রুট যাতায়াতকে সহজ করে তুলেছে, যা পর্যটন খাত এবং বাণিজ্যের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পরিকল্পনা ও তথ্য জেনে ভ্রমণ করলে যাত্রা হবে আরও নিরাপদ এবং আরামদায়ক। আশা করি, এই তথ্যগুলো আপনার পরবর্তী ভ্রমণ পরিকল্পনায় সহায়ক হবে।